Search
Close this search box.

ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

চট্টগ্রাম ডিসি অফিসের কোটিপতি কর্মচারী জামালের ক্ষমতার দাপট!

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন একজন ক্ষমতাধর ব্যাক্তি। শুধু ক্ষমতাধরই না। সামান্য তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হয়েও কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন তিনি।

সাবেক দুই জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছের মানুষ ছিলেন এই জামাল। এ কারণে তাঁর দাপটে তটস্থ থাকেন ডিসি অফিসের সকল কর্মকর্তা/কর্মচারী।

ডিসিদের প্রভাব খাটিয়ে তদবির, নিয়োগ, বদলি-বাণিজ্য, জায়গার লিজ দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তাঁর দুর্নীতির বিষয়ে অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অনুসন্ধানে আরও বেরিয়ে এসেছে চট্টগ্রাম শহরে দেড় কোটি টাকার বেশি দামের দুটি অ্যাপার্টমেন্ট ও বৈধ অবৈধ ব্যবসা বাণিজ্যের নানান হাট।

অভিযোগ রয়েছে-চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নাজির হিসেবে কর্মরত জামাল উদ্দিন। পদোন্নতি পেয়ে তিনি এ পদে যোগ ২০১৯ সালে। এর আগে তিনি উপজেলা ভূমি অফিসের অফিস সহকারী ছিলেন। সে সময় নানা তদবির ও অনিয়মের মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি। নাজির হওয়ার পরও একই ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সাধারণ মানুষ তার দুর্নীতির খতিয়ান তুলে ধরতে পোস্টার ছাপিয়েছেন এবং দেয়ালে দেয়ালে লাগিয়েছেন।

চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার গাছবাড়িয়ার তালুকদারপাড়া গ্রামের মৃত মোহাম্মদ ফয়েজ আহমদের ছেলে জামাল। ২০০৫ সালে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তিনি চাকরি নেন। শুরুতে বিভিন্ন উপজেলার ভূমি অফিসে চাকরি করেন। ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর তিনি জেলা প্রশাসনের ‘নাজির’ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের দুজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, সাবেক দুই ডিসির আমলে জামালের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল। নিয়োগ, বদলি-বাণিজ্য থেকে শুরু করে প্রায় সব ক্ষেত্রে তাঁর সম্পৃক্ততা রয়েছে। বিভিন্ন উপজেলার তহশিলদারদের পছন্দমতো বদলি বাবদ মোটা অঙ্কের ঘুষও নিতেন।

ওই দুই কর্মকর্তা জানান, সদ্য বিদায়ী জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামান এবং সাবেক জেলা প্রশাসক মোমিনুর রহমানের প্রভাব খাটিয়ে জামাল বিভিন্ন অনিয়ম করেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর জামাল তেমন একটা অফিস করছেন না। এলেও কিছু সময় থাকেন। সার্কিট হাউসে একটি রুম নিয়ে সেখান থেকে কয়েক দিন অফিস করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জামালের সাকল্যে বেতন ৩০ হাজার টাকার কিছু বেশি। কিন্তু তাঁর নামে রয়েছে কোটি টাকার সম্পদ।

গত ২ আগস্ট চট্টগ্রাম কর অঞ্চল-৪-এ জামালের আয়কর রিটার্ন প্রাপ্তি স্বীকারপত্রে দেখা যায়, তিনি আয়কর রিটার্নে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মাত্র অর্ধকোটি টাকার সম্পদের তথ্য উল্লেখ করেছেন। তবে বাস্তবে তাঁর সম্পদের পরিমাণ কয়েক গুণ বেশি বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। কেননা গত বছর জামাল ও তাঁর স্ত্রীর পৌনে ১ কোটি টাকার বেশি সম্পদের তথ্য সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছিল।

দুদক সূত্রে জানা যায়, গত বছর দুদক জামাল ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে একটি অনুসন্ধান শুরু করে। এ জন্য তাঁদের সম্পদ বিবরণী জমা দিতে বলা হয়। পরে জামাল ও তাঁর স্ত্রীর পৌনে ১ কোটি টাকার বেশি সম্পদের তথ্য সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ করেন। এর মধ্যে জামালের সম্পদের পরিমাণ ৩৭ লাখ টাকা (স্থাবর ১৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকা ও অস্থাবর ২২ লাখ ৮৬ হাজার টাকা) ও তাঁর স্ত্রী রুনা আক্তারের প্রায় অর্ধকোটি (স্থাবর ২৭ লাখ ৮৩ হাজার ৬০০ ও অস্থাবর ২৭ লাখ ৮৩ হাজার ৬০০) টাকার সম্পদ বিবরণীতে দেখানো হয়।

অনুসন্ধানের বিষয়ে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১-এর উপপরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত বলেন, তাঁর বিষয়ে অনুসন্ধান এখনো চলমান রয়েছে। অনুসন্ধান শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, নগরের কোতোয়ালিতে কোর্ট রোডে ‘কেসি দে গ্র্যান্ড ক্যাসেল’ নামে একটি বিলাসবহুল ভবনের চতুর্থ তলায় ফোর-সি ও ফোর-ডি নামে দুটি অ্যাপার্টমেন্টে জামাল তাঁর পরিবার নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে থাকছেন। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ৮৭ লাখ ৬৬ হাজার ৫০০ টাকায় তিনি ওই অ্যাপার্টমেন্ট দুটি (২ হাজার ৬৫ বর্গফুট) আবাসন প্রতিষ্ঠান ডি-ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের কাছ থেকে কেনেন। বর্তমানে এখানকার একটি অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য প্রতি বর্গফুট ৭ হাজার টাকা। সেই অনুযায়ী জামাল উদ্দিনের অ্যাপার্টমেন্ট দুটির বর্তমান বাজারমূল্য দেড় কোটি টাকার বেশি। অ্যাপার্টমেন্ট দেখা, কেনা, বায়নানামা, আর্থিক লেনদেন, চুক্তি, রেজিস্ট্রিসহ সবকিছুতেই শুরু থেকে জামালের উপস্থিতি থাকলেও এটার মালিকানা তিনি ২০২২ সালে কৌশলে শ্বশুরের নামে করিয়েছেন।

এ ছাড়া নগরের কেসি দে রোডে সোসাইটি টাওয়ারে একটি আবাসিক হোটেলের যৌথ মালিকানার ব্যবসা রয়েছে জামালের। ২০১৫ সালে তিনি ওই বিনিয়োগ করেন। হোটেল ব্যবসার চুক্তিনামাপত্রে দেখা যায়, কেসি দে রোডে সোসাইটি টাওয়ারের পঞ্চম তলায় ৫ হাজার ৪০০ বর্গফুটের আবাসিক হোটেলটিতে ২০২৫ সাল পর্যন্ত জামাল তাঁর নিজের নামে ১২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। খুলশী এলাকায় বিটিভি ভবনের ভেতরে ‘লা মেনসা’ নামের একটি বিলাসবহুল রেস্টুরেন্টে স্ত্রীর নামে ব্যবসায় বিনিয়োগেরও অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগ অস্বীকার করে জামাল বলেন, ‘কেসি দে রোডে আমি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকি। আমি সরকারি চাকরি করি, অ্যাপার্টমেন্ট কিনব কীভাবে। এ ছাড়া আমার বিরুদ্ধে অনিয়ম, নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থাকাসহ যা যা অভিযোগ শুনেছেন, সেগুলো কোনোটি সত্য নয়। আমার বিরুদ্ধে যাঁরা এসব বলছেন, তাঁদের আল্লাহ বিচার করবে।’ সার্কিট হাউসে অফিস করার বিষয়টিও সত্য নয় বলে দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, ‘আমি আপনার কাছে তাঁর বিষয়ে এইমাত্র শুনেছি। কদিন হয়েছে, আমি এখানে যোগদান করেছি। কিছুদিন যাক। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’

সর্বশেষ

চট্টগ্রাম ডিসি অফিসের কোটিপতি কর্মচারী জামালের ক্ষমতার দাপট!

শেখ হাসিনার ৭৮তম জন্মদিন আজ

মালদ্বীপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চায় বাংলাদেশঃ প্রধান উপদেষ্টা

রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য শনিবার ৪ ঘণ্টা ইন্টারনেট সেবা বিঘ্ন হতে পারে

শেখ হাসিনা পালালেও সংকট কাটেনিঃ মির্জা ফখরুল

চট্টগ্রামকে কেন্দ্র করে একটি সমন্বিত বন্দরনীতি প্রনয়ন করতে হবে-ফারহাদ মাজহার

যেভাবে নিষিদ্ধ হতে পারে আওয়ামী লীগ

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print